বাবা-মাকে হত্যার দায় অস্বীকার ঐশির

প্রকাশঃ অক্টোবর ১৪, ২০১৫ সময়ঃ ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

oishiমঙ্গলবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালতে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায় অস্বীকার করেছে মেয়ে ঐশি রহমান। আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেওয়া বক্তব্যে ঐশি বলেছে, নির্যাতন ও ভয় দেখিয়ে পুলিশ তার কাছ থেকে বাবা মাকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করেছিলো।

ঘটনার সময় তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। তার বাবা মা যখন খুন হন তখন তিনি বাসায় ছিলেন না। বন্ধুর বাসায় হুইস্কি খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। তার বাবা মাকে কে বা কারা খুন করেন তাও তিনি জানেন না।

আত্মপক্ষ সমর্থনের পর ২০ অক্টোবর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বাবা মাকে হত্যা মামলায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করে ঐশি। ক্রসফায়ারের ভয়ে জবানবন্দি দিয়েছিলেন বলে তিনি আবেদনে জানান। ওই আবেদন আদালত নথিভুক্ত করার আদেশ দেন।

ঐশি আদালতে দেওয়া প্রত্যাহার আবেদনে বলেন, তাকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বলা হয়, তাঁদের কথামতো ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কথা না বললে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অথবা ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হবে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এবং মৃত্যুর ভয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন। ওই জবানবন্দি সত্য নয় এবং স্বেচ্ছাপ্রণোদিতও নয়।

মাহফুজ দম্পতিকে হত্যার ঘটনায় মেয়ে ঐশি রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৯ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর। অন্য আসামিরা হলেন ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান ওরফে জনি ও মিজানুর রহমান ওরফে রনি এবং গৃহকর্মী সুমি আকতার।

এরপর ওই বছরের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঐশি একাই মা বাবাকে হত্যা করেন। এর আগে ঐশি মা বাবাকে ৬০টি ঘুমের বড়ি মেশানো কফি খাইয়েছিলেন। রাসায়নিক পরীক্ষায় ঘুমের ওষুধে নাইট্রাস, টেনিন ও ট্রমাজিপাম-৩-এর উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। এ ছাড়া মা স্বপ্না রহমানের ব্রোঞ্জের রক্তমাখা চুড়ি ও ঐশির রক্তমাখা কাপড়ের রক্তের সঙ্গে ঐশির রক্তের মিল পাওয়া গেছে।

গৃহকর্মী সুমিও এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। অভিযোগপত্রে ৫৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন মেয়ে ঐশি গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। ওই বছরের ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে ঐশি জবানবন্দি দেন। পরবর্তী সময়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছিলো বলে দাবি করে ৫ সেপ্টেম্বর ওই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেন ঐশির আইনজীবীরা।

প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G